পরমাণুর বর্ণালীর বিচ্ছিন্নতা ও Bohr এর পরমাণু মডেল

যখন একটা অণুকে প্রচন্ড তাপ দেওয়া হয়, সেগুলি আলো বিকিরণ করতে শুরু করে। আবার অণুগুলির উপর আলো ফেললে তা আলো থেকে শক্তি শুষে নেয়। এই বিকিরণ অথবা শোষনগুলি ঘটে নির্দিষ্ট কিছু তরঙ্গকম্পাঙ্কের জন্য, সেগুলিকে বলে বিকিরণ বর্ণালী ও শোষন বর্ণালী। এর থেকে বোঝা যায় যে অণুগুলির আভ্যন্তরীণ ইলেক্ট্রন, প্রোটন ইত্যাদির শক্তিস্তরগুলির নির্দিষ্ট মান রয়েছে। সেইমানের চেয়ে কম বা বেশি তরঙ্গকম্পাঙ্কের শক্তি তারা শোষন ও করেনা, বিকরণও করেনা।

কিন্তু ক্লাসিকাল মডেলে বিষয়টা আসলে এরকম নয়। m ভরের একটা হাইড্রোজেন পরমাণুর কথাই ধরো, যেখানে e চার্জের একটা ইলেকট্রন +e চার্জের প্রোটনকে ঘিরে ঘুরছে। মনেকরো অনেকটা গ্রহ-নক্ষত্র যেভাবে একটি আরেকটিকে কেন্দ্র করে ঘুরে, অনেকটা সেভাবে। ধরো ইলেকট্রনের ভর me আর প্রোটনের ভর mp এবং mpm। এক্ষেত্রে বিভবশক্তি- V(r)=e24πε01r, এখন যদি তুমি ইলেকট্রনের গতিবিধি নিউটনের সূত্র দিয়ে ব্যাখ্যা করতে চাও, তাহলে কৌণিক ভরবেগ L¯ এর মান হবে ধ্রুবক আর তার শক্তি হবে E=12mv2+V(r)

কিন্তু একটু আগে যে বলেছিলাম, অণুকে তাপ দিলে বা তার উপর আলো ফেললে বিভিন্ন ধরণের বর্ণালী দেখা যায়? এই মডেলটা দিয়ে সেটা কোনভাবেই ব্যাখ্যা করা যায়না। তার উপর, ইলেকট্রনটিকে যদি প্রোটনের চারদিকে বৃত্তাকার পথে ঘুরতে হয়, তাহলে উপর আলাদা একটা বল প্রয়োগ করতে হবে। ক্লাসিকাল মেকানিক্স অনুযায়ী সেই বলের মান- F=mv2r=e24πε01r2. কিন্তু বিদ্যুতচুম্বক কণা গতিপ্রাপ্ত হলে তাদের বিকিরণ ঘটে। আর বিকিরণের সাথে সাথে শক্তিও হারাতে থাকে। সুতরাং ক্লাসিকাল মডেল অনুযায়ী, তাহলে ইলেকট্রন ঘুরতে ঘুরতে এভাবে শক্তি হারাতে হারাতে প্রোটনের ঘাড়ে গিয়ে পড়বে। কিন্তু বাস্তবে সেরকম কিছুই হয়না! তাহলে আসল ব্যাপারটা কি?

বোর এই সমস্যার সমাধান দিতে গিয়ে নতুন একটি ধারনার প্রবর্তন করেন। উনি বলেন যে, কৌণিক ভরবেগের মান হবে কোয়ান্টাইজড, এবং সেটি L=mrv=n দ্বারা নির্ণয় করা যাবে (এখানে n=1,2,)। কৌণিক ভরবেগের এই মানের সাথে বলের সমীকরণ মিলিয়ে তুমি n গুলির জন্য r এবং v এর মান বের করতে পারবে- rn=4πε0me22n2vn=e24πε01nEn=12m(e24πε0)21n2 মনেকরো ইলেকট্রন কোন নির্দিস্ট কম্পাঙ্ক থেকে ω শক্তি সঞ্চয় করে অথবা বিকিরণ করে দুইটি শক্তিস্তর nm এর ভেতর আসা-যাওয়া করতে পারে m>n। তাহলে - E=ω=EnEm=12m(e24πε0)2(1n21m2). এই মডেলটি এক্সপেরিমেন্টগুলি থেকে পাওয়া সমাধানের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়। এবং এখান থেকে হাইড্রোজেন অণুর সাইজ সম্পর্কেও একটা ধারণা পাওয়া যায়- r1=(4πε0me2)25.29×1011m এটি বোর ব্যাসার্ধ নামে পরিচিত।

এই মডেলটি এক্সপেরিমেন্ট থেকে পাওয়া ফলাফলগুলিকে ব্যাখ্যা করতে পারলেও অণুগুলির ব্যাসার্ধ বা কৌণিক ভরবেগ কেন কোয়ান্টাইজড হবে সেটার খুব বেশি ধারনা দিতে পারেনা। কৌণিক ভরবেগ কোয়ান্টাইজড হবার কারণ জানার জন্য প্রয়োজন হচ্ছিলো আরও চুলচেরা বিশ্লেষন।
পরমাণুর বর্ণালীর বিচ্ছিন্নতা ও Bohr এর পরমাণু মডেল পরমাণুর বর্ণালীর বিচ্ছিন্নতা ও Bohr এর পরমাণু মডেল Reviewed by Dayeen on ডিসেম্বর ২৪, ২০২০ Rating: 5
Blogger দ্বারা পরিচালিত.